শেরপুরের নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামাল আজাদের বিরুদ্ধে বিজয় দিবসকে জাতীয় শোক দিবস উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে। একটি কলেজের অধ্যক্ষ হয়েও এমন কাজে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগও করেছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা। ক্ষোভ ঝেড়েছেন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধারাও।
স্থানীয়দের অভিযোগ, চন্দ্রকোনা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামাল আজাদ গত ১৪ ডিসেম্বর ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত টাইম লাইনে মহান বিজয় দিবসকে জাতীয় শোক দিবস উল্লেখ করে ওই দিবসে সকল শিক্ষক-কর্মচারীদের কলেজে উপস্থিত থাকার জন্য বলেন। বিষয়টি মূহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে নেট দুনিয়ায়। এতে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সকল মহল।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চন্দ্রকোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিন্টু গত ১৮ ডিসেম্বর নকলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জানান, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। অভিযোগটি আমাদের আমলে নেয়ার সুযোগ থাকলে, অবশ্যই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মিজানুর রহমান মিন্টু বলেন, ৩০ লক্ষ শহীদ ও দু লক্ষ মা বোনের কঠিন ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় স্বাধীনতার ৫২ বছরেও রয়ে গেছে কিছু স্বাধীনতায় বিশ্বাসহীন মানুষ। যার প্রমাণ চন্দ্রকোনা কলেজের অধ্যক্ষের এমন পোস্ট। এটি সম্পূন্ন উদ্দ্যেশ প্রণোদিত হয়ে নির্বাচনের এমন আগ মূহুর্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য এবং বিজয় দিবসকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই পোস্টটি দিয়েছেন। তার কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যপারে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামাল আজাদ বলেন, বিষয়টি ভুলবশত হয়েছে। পরবর্তীতে আমি সংশোধন করে নিয়েছি। আমি কোন রাজনীতির সাথে যুক্ত নই।
এদিকে এই ঘটনায় ক্ষোভ ঝেড়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারাও। নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল ইসলাম জিন্নাহ জানান, ওনার আব্বার মুক্তি যুদ্ধের সময় বিতর্কিত ভূমিকা ছিলো। কাজেই তাদের দ্বারা এরকম কাজ হতেই পারে। তবে মহান বিজয় দিবস নিয়ে এ ধরনের পোস্ট দেয়া খুবই অন্যায় হয়েছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।
কলেজের সভাপতি ও শেরপুর জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম বলেন, এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো। দায়িত্বশীল পদে থেকে জাতীয় দিবস নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য দুঃখজনক।