বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত

সকাল পর্যন্ত এই অবস্থা থাকলে আমরা কেউ বাঁচব না

এক অ্যাপেই সব চাকরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি

ঘূর্ণিঝড় রেমাল এখন বরিশালের উপকূলে তাণ্ডব চালাচ্ছে। এতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কলাপাড়া, খেপুপাড়া, রাঙ্গাবালি, বরগুনা, পাথরঘাটা, মনপুরা, বোরহানউদ্দিন, দৌলতখানসহ বেশ কয়েকটি উপজেলা। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট কোথাও কোথাও ৬ থেকে ৭ ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার আন্ধারমানিক নদীর তীরের বাসিন্দা শামীম সিকদার জানিয়েছেন, খুব ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। ঘরের চালা নিয়ে গেছে। নদীর পানি প্লাবিত হয়ে চারদিক তলিয়ে গেছে। গাছপালা ভেঙে তছনছ করে দিচ্ছে। কত শত ঘর ভেঙেছে, তার ধারণাও করা যাচ্ছে না।

রাঙ্গাবালী উপজেলার সাবেক ইউপি মেম্বার এমাদুল বেপারী বলেন, পুরো উপজেলা বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। পানি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। রাত যত বাড়ছে মনে হচ্ছে যেন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। জীবনে কখনো বন্যার এমন তাণ্ডব দেখিনি।

ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাঁকুচিয়ার বাসিন্দা সেকেন্দার সিকদার বলেন, অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসেনি। তাদের কী হাল হচ্ছে জানি না। আশ্রয়কেন্দ্রে থেকেই আতঙ্কে আছি। সকাল পর্যন্ত এই অবস্থা থাকলে আমরা কেউ বাঁচব না।

সকালে দুর্বল হতে পারে রেমাল
১৫ থেকে ১৮ কিলোমিটার বেগে এগুচ্ছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল
শক্তি দেখাচ্ছে রেমাল, পটুয়াখালীতে সর্বোচ্চ ১০২ কি.মি. বেগে আঘাত
বরগুনার নিশানবাড়ি এলাকার বাসিন্দা শহিদুল বলেন, আশ্রয়নে এসেও নিরাপদ লাগছে না। নদীর পানি সবকিছু তলিয়ে ফেলেছে। প্রকাণ্ড ঢেউ, গাছ ভেঙে ফেলছে কঞ্চির মতো। রাস্তা ভেঙে গেছে। বরগুনা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, বিভাগের ছয় জেলায় তিন লাখের মতো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা ব্যক্তিদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে সার্বিক চিত্র জানা গেছে।

জানা গেছে, কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া, মঞ্জুপাড়া, চর চান্দুপাড়া, হাসনাপাড়া, চন্দপাড়া, পশুরিবুনিয়া, ছোট পাঁচ নম্বর, বড় পাঁচ নম্বর ও বানাতিসহ নয়টি গ্রামের বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে ২৪টি গ্রামের ঘরবাড়ি।

ভোলা জেলার ধনিয়া, নাছির মাঝি, রাজাপুর, শিবপুর, চটকিমারার চর, চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর, কুকরী-মুকরি ও চর পাতিলা, দৌলুতখানের সৈয়দপুর, মনপুরার পুরো উপজেলাসহ কমপক্ষে ১৫০টি গ্রাম প্লাবিত। বরগুনা, আমতলী, তালতলী ও পাথরঘাটা উপজেলার ১০০ গ্রামের বেশি প্লাবিত হয়েছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেড়িবাধ।

এদিকে বরিশাল জেলার হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ, মুলাদী, বাকেরগঞ্জ এলাকায় প্লাবনের পরিমাণ বেশি। জেলার কমপক্ষে ৮০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পিরোজপুরেও অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের ১৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং ২০টি মুজিব কেল্লাতে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার মানুষকে আশ্রয় দিতে পেরেছি। প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও সুপেয় পানি নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে বর্তমানে কলাপাড়ার উপকূলবর্তী এলাকাগুলো অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এখানকার পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

বরিশালের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ, মুলাদী উপজেলা নদী তীরবর্তী হওয়ায় অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এসব উপজেলাসহ অন্যান্য উপজেলায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়কালীন ও পরবর্তী অবস্থা মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া আছে।

বিভাগের বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৪২টি উপজেলা বর্তমানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। প্রবল বর্ষণ আর বাতাসের গতিবেগে ক্যাবল ছিড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, তাই সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে।

পটুয়াখালীর খপুপাড়া রাডার স্টেশনের ইনচার্জ আব্দুল জব্বার শরীফ বলেছেন, ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল হয়ে স্থলভাগের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ৫-৬ ঘণ্টা উপকূলে থাকতে পারে। জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিবায়ু উপকূলবাসীকে ক্ষতির মুখে ফেলবে।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম বলেন, বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ১১টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সন্ধ্যা ৬টার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জানান, বরিশালের বুড়িশ্বর নদীর পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ঝালকাঠির বিশখালী ২৬ সেন্টিমিটার, ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার সুরা-মেঘনা নদীর পচনি ৬৪ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিনের মেঘনা ১ মিটার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ভোলার তেঁতুলিয়া ১৪ সেন্টিমিটার, পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার বুড়িশ্বর ৩৫ সেন্টিমিটার, বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার বুড়িশ্বর নদীর পানি ৩৩ সেন্টিমিটার, বরগুনা সদরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বিশখালী ৬৭ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত বিশখালী ৭২ সেন্টিমিটার, পিরোজপুর জেলার বলেশ্বর নদী ৩৩ সেন্টিমিটার ও পিরোজপুরের কঁচা নদীর পানি ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পরবর্তী কয়েক ঘণ্টায় পানির উচ্চতা আরো বেড়েছে বলেও জানান তিনি

তথ্যসূত্রঢাকা পোস্ট
Md. Naimur Rahman Talucder
Md. Naimur Rahman Talucderhttps://www.sherpurlive24.com/
MD. Naimur Rahman Talucder is an author of SherpurLive24. He is working as a journalist since 2020. Besides this he working as a volunteer since 2012.

আমাদের সাথে যুক্ত হোন

106,000FansLike
3,500FollowersFollow
1,600SubscribersSubscribe

সর্বোচ্চ পঠিত

সর্বশেষ আপডেট

শেরপুর জেলার প্রথম ডিজিটাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ও তারুণ্যের পোর্টাল শেরপুর লাইভ ২৪ ডট কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় : শেরপুরের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সমস্যা ও সম্ভাবনা, ফিচার, ভ্রমণ, সাহিত্য, পর্যটন এবং কৃষি-প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন sherpurlive247@gmail.com ঠিকানায়।

২০১৭ সাল থেকে যাত্রা শুরু করা শেরপুর লাইভ - শেরপুর জেলার প্রথম ডিজিটাল মিডিয়া, প্রোডাকশন, লাইভ ব্রডকাস্ট এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম। যাত্রালগ্ন থেকেই প্লাটফর্মটি তারুণ্যকে কাজে লাগিয়ে জেলা ব্র্যান্ডিংয়েরে কাজ করে আসছে। শেরপুরকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র, স্থিরচিত্র ও তথ্য প্রকাশের প্লাটফর্ম এটি।

Sherpurlive24.com is the first digital media platform of Sherpur District & one of the popular Bangla media news portal in Sherpur. It has begun with commitment of district branding, youth awareness, fearless, informative and independent citizen journalism. This portal has started to provide live video production & real time news updates with maximum use of modern technology from 2017. 
A genius team of Sherpur Live has been built with a group of energetic young citizen journalists. We are trying to spread Sherpur district as a famous district for its tourism sector & build a bridge with Sherpur around the world and adding a new dimension to district branding with our digital media platform SherpurLive24.com

কার্যালয় : কক্ষ নং ০৪, সাদেক ভবন (নীচ তলা)
চকবাজার, শেরপুর শহর, শেরপুর ২১০০।

মোবাইল : 01866 293 776
মেইল : sherpurlive247@gmail.com