বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত

‘এবারই মনে হয় এত লম্বা সময় ধরে ঝোড়ো বাতাস হচ্ছে’

এক অ্যাপেই সব চাকরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি

বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়া ও টানা বৃষ্টিতে জেলার কয়েকটি নদ-নদীর পানি ৪ থেকে ৮ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসের পানির চাপে বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে বাঁধ উপচে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন লোকালয়। ইতিমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে সহস্রাধিক পরিবার। সেই সঙ্গে ভেসে গেছে কয়েক হাজার মাছের ঘের।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এস এম রাসেল মুঠোফোনে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আশপাশের অসংখ্য মৎস্যঘের ভেসে গেছে। এই পানি না নামা পর্যন্ত প্রকৃত চিত্র বোঝা সম্ভব নয়। প্রাথমিকভাবে জেলায় প্রায় ২২ হাজার মৎস্যঘের তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মোংলা, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা ও রামপাল উপজেলায়।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আশপাশের অসংখ্য মৎস্যঘের ভেসে গেছে। এই পানি না নামা পর্যন্ত প্রকৃত চিত্র বোঝা সম্ভব নয়। প্রাথমিকভাবে জেলায় প্রায় ২২ হাজার মৎস্যঘের তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মোংলা, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা ও রামপাল উপজেলায়।
এ এস এম রাসেল, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা
রামপাল উপজেলার বাইনতলা চাকশ্রী গ্রামের চিংড়িচাষি শেখ নূর ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে জোয়ারের পানির চাপে ঘেরের বাঁধ ভেঙে প্রায় এক লাখ টাকার চিংড়ি মাছ ভেসে গেছে।

ঘের ব্যবসায়ী ডালিম শেখ বলেন, ‘জোয়ারের পানির চাপ এতটাই প্রবল ছিল যে মুহূর্তের মধ্যেই আমার ঘের পানিতে তলিয়ে যায়। রাত থেকে আমার ঘেরসহ এখানকার প্রায় অর্ধশত মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে আছে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ১২টা থেকে বাগেরহাটের নদ-নদীগুলোতে অস্বাভাবিক মাত্রায় পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত এ প্রবণতা দেখা গেছে। এতে পানগুছি নদীর তীরসংলগ্ন মোরেলগঞ্জ, বলেশ্বর তীরবর্তী শরণখোলা, পশুর নদের তীরবর্তী মোংলা, কুমারখালী ও ঘষিয়াখালী তীরের রামপাল ও বাগেরহাট ভৈরব ও দরটানা নদীতীরের সদর উপজেলার বাঁধ উপচে ও ভেঙে অন্তত ৭০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে পড়েছে।

আজ সকালে বাগেরহাট সদর উপজেলার মাঝিডাঙ্গা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। ভৈরব নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে তাঁদের বাড়িঘর। স্থানীয় বাসিন্দা ডেইজি বেগম বলেন, রাত দুইটার দিকে মাঝিডাঙ্গা-পোলঘাট সড়কের ওপর দিয়ে পানি এসে এলাকাটি তলিয়ে যায়। এর আগেই সড়কের বিপরীত পাশে থাকা শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছিল। পানিতে ঘরের আসবাব, ফ্রিজ, বিছানা—সবকিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রান্না করে খাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। সবখানেই পানি। এ ছাড়া উপজেলার চরগ্রাম, ভদ্রপাড়া, সুলতানপুর, ভাঙ্গনপাড়, রহিমাবাদ, ডেমাসহস অন্তত ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী রয়েছেন বাসিন্দারা।

এত পানি আগে দেখিনি। ঝড় তো মাঝেমধ্যেই হয়। তবে এবারই মনে হয় এত লম্বা সময় ধরে ঝোড়ো বাতাস হচ্ছে। নদীতে ভাটা হইছে, কিন্তু পানি কমেনি। গতকাল দুপুরে জোয়ারে যেমন পানি ছিল। আজ সকালে ভাটাতেই সেই পরিমাণ পানি।
সুলতানপুর এলাকার শহিদুল ইসলাম
সুলতানপুর এলাকার শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এত পানি আগে দেখিনি। ঝড় তো মাঝেমধ্যেই হয়। তবে এবারই মনে হয় এত লম্বা সময় ধরে ঝোড়ো বাতাস হচ্ছে। নদীতে ভাটা হইছে, কিন্তু পানি কমেনি। গতকাল দুপুরে জোয়ারে যেমন পানি ছিল। আজ সকালে ভাটাতেই সেই পরিমাণ পানি।’

এদিকে শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের রাজৈর এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। যার ফলে ওই এলাকার পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পেড়েছে। এ ছাড়া একই উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বগি ও চালিতাতলা এলাকায় রিং বেড়িবাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করে অন্তত তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

শরণখোলার তাফালবাড়ি এলাকার নাজমুল বলেন, ‘আমাদের এলাকা বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সব সময় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কও পাওয়া যাচ্ছে না। সব মিলে আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি।’

জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উঁচু জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসে বাগেরহাটের তিন উপজেলার অন্তত পাঁচটি এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। এর মধ্যে মোরেলগঞ্জ উপজেলার বলইবুনিয়ার শ্রেণিখালী এলাকায় পানগুছি নদীতীরবর্তী দৈবজ্ঞহাটি উপপ্রকল্পের দুটি স্থানে ১০ মিটার ও একই নদীর পঞ্চকরণের দেবরাজ এবং কুমারিয়াজোলা এলাকায় ৪০০ মিটার, শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা খালের রাজৈর এলাকায় ৩৫/১ পোল্ডারের ৮০ মিটার এবং বাগেরহাট সদর উপজেলার ভৈরব নদতীরবর্তী গোপালকাঠি এলাকার নাজিরপুর উপপ্রকল্পের ৪০ মিটার ও দড়াটানা নদীর বিষ্ণুপুর এলাকার বেমরতা উপপ্রকল্পে ৬ মিটার বাঁধ জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ ছাড়া মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপাল উপজেলায় বাঁধের বাইরে থাকা বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে পুরো সুন্দরবন। করমজলসহ বনের উঁচু এলাকাগুলোও দুপুরের জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে বন্য প্রাণীর বড় ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে নদীতে ভাটা এলেও পানি কমছে না। ফলে দুপুরের জোয়ারে আবারও নতুন করে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তথ্যসূত্রপ্রথম আলো
Md. Naimur Rahman Talucder
Md. Naimur Rahman Talucderhttps://www.sherpurlive24.com/
MD. Naimur Rahman Talucder is an author of SherpurLive24. He is working as a journalist since 2020. Besides this he working as a volunteer since 2012.

আমাদের সাথে যুক্ত হোন

106,000FansLike
3,500FollowersFollow
1,600SubscribersSubscribe

সর্বোচ্চ পঠিত

সর্বশেষ আপডেট

শেরপুর জেলার প্রথম ডিজিটাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ও তারুণ্যের পোর্টাল শেরপুর লাইভ ২৪ ডট কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় : শেরপুরের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সমস্যা ও সম্ভাবনা, ফিচার, ভ্রমণ, সাহিত্য, পর্যটন এবং কৃষি-প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন sherpurlive247@gmail.com ঠিকানায়।

২০১৭ সাল থেকে যাত্রা শুরু করা শেরপুর লাইভ - শেরপুর জেলার প্রথম ডিজিটাল মিডিয়া, প্রোডাকশন, লাইভ ব্রডকাস্ট এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম। যাত্রালগ্ন থেকেই প্লাটফর্মটি তারুণ্যকে কাজে লাগিয়ে জেলা ব্র্যান্ডিংয়েরে কাজ করে আসছে। শেরপুরকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র, স্থিরচিত্র ও তথ্য প্রকাশের প্লাটফর্ম এটি।

Sherpurlive24.com is the first digital media platform of Sherpur District & one of the popular Bangla media news portal in Sherpur. It has begun with commitment of district branding, youth awareness, fearless, informative and independent citizen journalism. This portal has started to provide live video production & real time news updates with maximum use of modern technology from 2017. 
A genius team of Sherpur Live has been built with a group of energetic young citizen journalists. We are trying to spread Sherpur district as a famous district for its tourism sector & build a bridge with Sherpur around the world and adding a new dimension to district branding with our digital media platform SherpurLive24.com

কার্যালয় : কক্ষ নং ০৪, সাদেক ভবন (নীচ তলা)
চকবাজার, শেরপুর শহর, শেরপুর ২১০০।

মোবাইল : 01866 293 776
মেইল : sherpurlive247@gmail.com